তানভীর আহমেদ::
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সুনামগঞ্জে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘জেলা প্রশাসন মেধা যাচাই বৃত্তি পরীক্ষা’।
জেলার শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে এই পরীক্ষায় ১২টি উপজেলার চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬৭ হাজার ৭৬৫জন। এরমধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৫৯ হাজার শিক্ষার্থী। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭শ ৬৫জন। এর মধ্যে, ৪র্থ শ্রেণির পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির হার ৮৫.৪৩ শতাংশ। আর ৫ম শ্রেণির পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির হার ৮৮.৮৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির হার ৮৭.০৬ শতাংশ। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলার ৩০৪টি কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি, গণিত, প্রাথমিক জ্ঞান ও বিশ্ব পরিচয়- এই পাঁচটি বিষয়ের ওপর মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আয়োজকরা জানান, হাওরাঞ্চলে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করা, তাদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব তৈরি করা এবং একই সাথে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কার্যকর মূল্যায়নের লক্ষ্যেই এই বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাদান পদ্ধতির গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, মেধা যাচাই পরীক্ষার ফলাফল আরএমএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হবে। এর ফলে পরীক্ষার ফলাফল এবং শিক্ষার্থীদের দুর্বলতার ক্ষেত্রগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
এদিকে, বুধবার সকাল ১১ টায় সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। পরীক্ষা পদ্ধতি এবং শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া হাওরাঞ্চলের শিক্ষার মানোন্নয়নের এই মেধা যাচাই পরীক্ষা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মনে হয়েছে এই অঞ্চলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন আন্তরিক হন, ক্লাসে পড়ান। তাঁরা ক্লাসে এমনভাবে পড়ান যাতে একটা নিয়ম শেখালে শিক্ষার্থীরা যেন ঐ সম্পর্কিত সকল সমস্যা সমাধান করতে পারে। শুধুমাত্র পার্টিকুলার কোনো প্রশ্নের উত্তর যেন শিক্ষার্থীরা না জানেন। সাধারণ একটা পারসেপশন যেন তৈরি হয়। তারা যেন সিমিলার টাইপের সমস্যাগুলোর উত্তর দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষক-অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রী যাতে পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হয়, ক্লাসে উপস্থিতির হার বাড়ে এবং শিক্ষার গুণগত মানের পরিবর্তন ঘটে - এই উদ্দেশ্যে মূলত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে মেধা বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এই পরীক্ষায় যারা ভালো ফলাফল করবে আমরা তাদের জন্য ভালোমানের বৃত্তির ব্যবস্থা করবো।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া আরও বলেন, মেধা যাচাই বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ালেখায় শিক্ষার্থীদের যে সিরিয়াসনেস শুরু হয়েছে দেখবেন পঞ্চম শ্রেণিতে যারা আছে তারা আরও বেশি সিরিয়াস হবে। পঞ্চম শ্রেণিতে তারা যদি ভালো ফলাফল করে তাহলে দেখবেন পড়ালেখার প্রতি আরও আগ্রহ বাড়বে। এই আগ্রহ তার পরবর্তী পরীক্ষা অর্থাৎ এসএসসি পর্যন্ত যাবে। সেখানে ভালো ফলাফল করলে এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করার চেষ্টা করবে। তাহলে আমরা আশা করতে পারি সেখান থেকে একটা ভালো ও দক্ষ মানবস¤পদ বেরিয়ে আসবে।
পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনকালে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা জেরিন, সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাফিজুর রহমান খানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
যারা ভালো ফলাফল করবে, তাদের জন্য ভালো মানের বৃত্তির ব্যবস্থা করবো : জেলা প্রশাসক
জেলায় প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘মেধা যাচাই বৃত্তি পরীক্ষা’
- আপলোড সময় : ৩০-১০-২০২৫ ০৮:১৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩০-১০-২০২৫ ০৮:১৮:১৩ পূর্বাহ্ন
ছবি: পরিক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা ইউএনও সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ

স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক সুনামকণ্ঠ